Drinking Water Fountains of Kolkata bangla
story-icon-drinking-water-fountaine

কলকাতার পানীয় জলের ফোয়ারা

অকথিত ফোয়ারাদের অজানা গল্প
পরিচালনা
সুকৃত সেন, গঙ্গোত্রী গাঙ্গুলি এবং অরিন্দম রায়

 কলকাতা ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতবর্ষের প্রাক্তন রাজধানী ও দেশের অন্যতম সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এই শহরে তাই অনেক ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ ও ল্যান্ডমার্ক রয়েছে- যা গর্বের। সেগুলি শহরের সমৃদ্ধি ও বৈচিত্র্যময় ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করে। তার মধ্যে কলকাতার ঝর্ণাগুলি শহরের ইতিহাস ও নান্দনিক সৌন্দর্যের ধারক ও বাহক হয়েছে।  এই ঐতিহাসিক ফোয়ারাগুলো বেশিরভাগই ঔপনিবেশিক যুগের। এগুলি শহরের ল্যান্ডস্কেপে শুধুমাত্র সৌন্দর্যায়ন করেনি সেইসঙ্গে জল সরবরাহ করেছে। তবে, এগুলো জনগণের স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশনে ভূমিকা নেয়। শহরের আন্তঃসাংস্কৃতিক ডায়াস্পোরিক তাৎপর্যকেও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে।

ডলফিন মাথাওয়ালা পানীয় জলের ফোয়ারা, কিন্তু এখন আলিপুর চিড়িয়াখানায় এটিকে প্লাস্টিকের স্পাউট দিয়ে লাগানো হয়েছে

সকলের জন্য পানীয় জল

সিংহের মাথাওয়ালা জলের ফোয়ারা

আলোচনার মধ্যে প্রথমটি হল একগুচ্ছ ঝর্ণা যা ‘গ্রেকো-রোমান মোটিফ’ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত হয়েছিল। এগুলির বেশিরভাগই আজও শহরের পুরানো পাড়াগুলিতে পাওয়া যায়। ১৮৭০এর দশকে কলকাতার নাগরিকদের বিশুদ্ধ জল সরবরাহ করার জন্য, ব্রিটিশ সরকার এই কলগুলি তৈরি করেছিল। এইগুলি কারুকার্যময় সিংহের মাথার সাথে স্তম্ভের মতো প্রতিষ্ঠাপিত হয়ে রয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই লোহার কলগুলি ‘গ্লাসগো অ্যালি এন্ড ম্যাকলেলান’ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল।  তাই এগুলোকে স্থানীয়ভাবে তৈরি না করা পর্যন্ত এগুলোকে স্কটল্যান্ড থেকে আমদানি করা হয়েছিল।

এসবের আগে পবিত্র গঙ্গা নদী, যা ক্রমশ দূষিত হতে থাকছে মানুষের অনিয়ন্ত্রিত কার্যকলাপের কারণে। সেখান থেকে পানীয় ও স্নানের জন্য জল সরবরাহ করা হত। হুগলি নদী যেটি গঙ্গার একটি উপনদী, সেখানে একটি পাইপলাইনের ব্যবস্থার মাধ্যমে সিংহের ট্যাপকলের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছিল। যা একটি উর্ধ্বপ্রবাহ বা নিম্নপ্রবাহ পথের নুড়ি পরিস্রাবণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে পরিস্রুত হয়ে শহরের নানান এলাকায় জল বিতরণ করে দিত। এই পাইপলাইনগুলির আউটলেটগুলি আজও শহরের বিভিন্ন অংশে দেখা যায়, যেখানে শত শত গৃহস্থালী জল সংগ্রহের জন্যে আসে।

সিংহের মাথাওয়ালা ফোয়ারার প্রতীক ছবি গঙ্গোত্রী গাঙ্গুলি
কলকাতা পৌরসভার জল নির্গমন ব্যবস্থায় নাগরিকরা স্নান করছেন

“ব্রিটিশরা একটি ঔপনিবেশিক ডিক্রি লিখেছিল যাতে বলেছিল, “না চাইলে, নষ্ট নয়”। কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ করে পরবর্তীতে বাংলায় তৈরি করা লোগোর সাথে লেখা হল “আপচয় কোরোনা, অভবো হোবেনা” (অপচয় করো না, অভাবও হবে না)”

সিংহ মাথাওয়ালা কল বৃহত্তর স্যানিটেশনের প্রয়োজনে কল্যাণকর কিনা- সে জন্য ব্রিটিশ সরকারের উদ্বেগ দেখা দেয়। তবে কিছু সামাজিক গোষ্ঠী তাদের বিরোধিতা করেছিল ও তাদের সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করেছিল। কারণ, তারা মনে করেছিল যে জলকলের ওয়াশারগুলি গরু বা শূকরের চামড়া দিয়ে তৈরি হয়েছে। যা তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে অপমানের বিষয় হতে পারে। আবার কেউ কেউ বিশ্বাস করত, সিংহের মুখ থেকে নির্গত জল গঙ্গার জলের মতো পবিত্র জল নয়। ব্রিটিশরা একটি ঔপনিবেশিক ডিক্রি লিখেছিল যাতে বলেছিল, “না চাইলে, নষ্ট নয়”। কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ করে পরবর্তীতে বাংলায় তৈরি করা  লোগোর সাথে লেখা হল “আপচয় কোরোনা, অভবো হোবেনা” (অপচয় করো না, অভাবও হবে না)। CWW (ক্যালকাটা ওয়াটার ওয়ার্কস) কলকে নিয়ে এই ধারণাগুলি দূর করতে ও জলের অপচয় এড়াতে এই প্রচার করে। এই সিংহমুখী ট্যাপকলগুলি তৎকালীন ঔপনিবেশিক রাজধানীর নান্দনিক চরিত্র নির্মাণে অনেক অবদান রেখেছে ও শহরের প্রাকৃতিক দৃশ্যে হিসেবে ব্রিটিশ রয়্যালভাবের ছোঁয়াকে বর্তমান রেখেছিল।  সেসময়কার ভবন ও স্মৃতিস্তম্ভের স্থাপত্য শৈলীর সঙ্গে এগুলো মিলে মিসে ছিল। আজ এই কলগুলির বেশিরভাগই ভাঙা রয়ে গেছে ও সেগুলির জল সরবরাহের পাইপগুলি এখনও রয়ে গেছে। তারা হয় এই ফোয়ারার পাশে স্বাধীনভাবে কাজ করে নয়তো, কারিগরের অভাবে সিংহমাথার মুখ দিয়ে জল নিষ্কাশন করা হয়। এই ঝর্ণাগুলি আজও কলকাতার ব্যস্ততার মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে, সেইসঙ্গে শহরের নদী ও তৎসংলগ্নের মানুষের মধ্যে বিদ্যমান জীবন্ত সম্পর্কের কথাকে মনে করিয়ে দেয়।

বর্তমান সময়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত সিংহমুখি ট্যাপকল

“আগের দিনগুলিতে, নগর পরিকল্পনা ছিল খুব নিয়মতান্ত্রিক জলের ফোয়ারাগুলি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল যে প্রতি কয়েকশ গজের জন্য তাদের আগুনের জলের ব্যবস্থাও থাকবে। ক্ষতিগ্রস্থ হলেও, এটি এখনও কলকাতার জোড়াসাঁকোতে দাঁড়িয়ে আছে”

প্যানিওটি ফোয়ারা

দ্বিতীয় ঝর্ণাটি হল প্যানিওটি ঝর্ণা। কার্জন পার্ক ওরফে সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী পার্কের উত্তর-পশ্চিম কোণে শহরের সবচেয়ে নিশ্চুপ স্থানের একটিতে এটি অবস্থিত, যা আজ ‘ভাষা উদ্যান’ নামে পরিচিত। রাজভবনের পূর্ব দিকের গেট থেকে বিপরীতে এবং এসপ্ল্যানেড ম্যানশনের দক্ষিণ দিকে এটির অবস্থান। প্যানিওটি ফাউন্টেন হল একটি মার্বেল পাথরে নির্মিত পানীয় জলের ঝর্ণা। এটি ১৮৯৮সালে ওল্ড কোর্ট হাউস স্ট্রিট ও এসপ্ল্যানেডের রাস্তার সংযোগস্থলে স্থাপন করা হয়েছিল। ডেমেট্রিয়াস প্যানিওটি’র নামকে স্মরণ করে রাখতে এই নাম। যিনি দেশের গ্রীক ব্যবসায়ীদের পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তিনি বেশ কয়েকজন ভারতের গভর্নর জেনারেলের ব্যক্তিগত সহকারী সচিবও হয়েছিলেন। ১৮৮৫সালে তাঁর মৃত্যুর পর, এই পানীয় জলের ফোয়ারাটি লর্ড কার্জন ১৮৯৮সালে ভারতীয় সাম্রাজ্যের প্রতি তাঁর অবদানের জন্য একটি স্মারক হিসাবে নির্মাণ করে এই নামকরণ করেন। 

“স্মৃতিস্তম্ভের পশ্চিম দিকের খিলানে বাইবেলের একটি প্রবাদ খোদাই করা আছে। যেখানে লেখা আছে A GOOD NAME IS RATHER TO BE CHOSEN THAN GREAT RICHES.”

ফোয়ারাটিকে একটি মুঘল প্যাভিলিয়নের আকারে তৈরি করা হয়েছে। যার চারটি মুখের প্রতিটিতে নয়টি ছত্রযুক্ত খিলান ও চারটি স্তম্ভের প্রতিটিতে সুন্দর মোটিফ রয়েছে। ১৯৫৮সালে এই স্মৃতিস্তম্ভটিকে সত্যজিৎ রায়ের সবচেয়ে সুপরিচিত চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে একটি ‘পরশ পাথর’ এর একটি পটভূমি হিসাবে দেখানো হয়েছিল। তাতে এটি আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়েছিল কারণ, এই স্মৃতিস্তম্ভেই ছিল চলচ্চিত্রের প্রধান নায়ক। তুলসী চক্রবর্তী অভিনীত ছবিতে তিনি পাথরের সন্ধান পেয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত ঝর্ণাটি আজ খুবই জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে, ওভার ঝুলে থাকা খাঁজগুলিতে চরমরূপে কাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে ও নানা দিকে গাছগাছালি বৃদ্ধির লক্ষণ দেখা গেছে। ঝর্ণাটি প্রায়শই খারাপ লোকদের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে কারণ, আমাদের পরিদর্শনের সময় ঝর্ণার খাঁড়িগুলিতে গ্রাফিতি ও জ্বালানী কাঠের প্রমাণ পাওয়া গেছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে, আশেপাশের এলাকাতে গাছ-লতাপাতার অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি এটিকে আবৃত করে থাকে। যা ঝর্ণাটিকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে, বিশেষ করে ঝড়ের সময়- যা কলকাতা শহরে ঘন ঘন হয়। তা সত্ত্বেও, কলকাতা মিউনিসিপ্যাল ​​কর্পোরেশন দ্বারা কলকাতার হেরিটেজ বিল্ডিংগুলির তালিকায় এই ঝর্ণাটিকে ‘গ্রেড ১ হেরিটেজ’ হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে এবং শহরের সমৃদ্ধ জল ঐতিহ্যে এটির অবদানকে স্বীকার করা হয়েছে।

“প্যানিওটি ফাউন্টেন হল একটি মার্বেল পাথরে নির্মিত পানীয় জলের ঝর্ণা। এটি ১৮৯৮সালে ওল্ড কোর্ট হাউস স্ট্রিট ও এসপ্ল্যানেডের রাস্তার সংযোগস্থলে স্থাপন করা হয়েছিল।”

Panioty-Fountain-2
Panioty-Fountain-3
Panioty-Fountain-3-1
Panioty-Fountain-4
Panioty-Fountain-5
Panioty-Fountain-6
Panioty-Fountain-7

প্যানিওটি ফোয়ারার পরিমাপ অঙ্কন – গঙ্গোত্রী গাঙ্গুলি,অরিন্দম রায়

সত্যজিৎ রায়ের ‘পরশপাথর’

প্যানিওটি ফোয়ারার একটি ত্রিমাত্রিক মডেল

প্যানিওটি ফোয়ারার ৩৬০ ডিগ্রির

ম্যাকডোনেল ফোয়ারা

“ফোয়ারাটি গথিক পুনরুদ্ধারকারী শৈলীর একটি চমৎকার উদাহরণ। যেটির শীর্ষে একটি ফুলের ক্যাপিটল ও সামনে একটি সিংহের মাথা রয়েছে।”

তৃতীয় ঝর্ণাটি হল ম্যাকডোনেল ঝর্ণা। এটি একটি ভিক্টোরিয়ান স্টাইলের জলের ঝর্ণা, যেটি এসপ্ল্যানেড রো-তে কলকাতা হাইকোর্টের কাছে অবস্থিত। এটি ১৮৯৪সালে বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসের একজন সিনিয়র সদস্য এবং হাইকোর্টের বিচারক উইলিয়াম ফ্রেজার ম্যাকডোনেলের স্মারক হিসাবে নির্মিত হয়েছিল। ফোয়ারাটি গথিক পুনরুদ্ধারকারী শৈলীর একটি চমৎকার উদাহরণ। যেটির শীর্ষে একটি ফুলের ক্যাপিটল ও সামনে একটি সিংহের মাথা রয়েছে। ঝর্ণাটি ঘোড়ার পানীয়ের উৎস হিসাবেও ব্যবহৃত হত। কারণ, ম্যাকডোনেল ছিলেন কলকাতা টার্ফ ক্লাবের একজন স্টুয়ার্ড। এটি উপমহাদেশের প্রধান ঘোড়ার দৌড়ের ক্লাব।

ম্যাকডোনেল বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসের একটি অংশ ছিলেন ও বিহারে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারকও হয়েছিল। ১৮৫৭সালের সিপাহি বিদ্রোহের সময় তিনি অসাধারণ সাহসিকতা প্রদর্শনের জন্য তিনি আলোতে এসেছিলেন। তিনি অনেক ইউরোপীয়কে বিদ্রোহীদের হাত থেকে উদ্ধার করেছিলেন ও ঝর্ণার উপর একটি ফলক অনুসারে তাঁর “পুরুষত্ব, ন্যায়পরায়ণতা ও সহৃদয় স্বভাব”-এর জন্য ভিক্টোরিয়া ক্রশ প্রদান করা হয়েছিল। যা দুর্ভাগ্যক্রমে বর্তমানে পাঠযোগ্য নয়। ফোয়ারাটির একদিকে ১৮৫০ এবং অন্য দিকে ১৮৮৬সালের দু’টি শিলালিপি রয়েছে এবং অন্যান্য স্মারকগুলির বিপরীতে বাংলায় একজন সরকারী কর্মচারী হিসাবে তাঁর মেয়াদকে চিহ্নিত করে জন্ম ও মৃত্যুর বছর জানানো হয়েছে। তাঁর মৃত্যুর বছর ১৮৯৪সালে ইংল্যান্ডে, এবছরেই তাঁর বন্ধুরা ঝর্ণাটি নির্মাণ করেছিলেন।

ডেসমন্ড দয়েগ এর ভুলে যাওয়া ঝর্ণা

ম্যাকডোনেল ফোয়ারার আকার চিত্র

এই ঝর্ণাটি একসময় কলকাতার একটি সুন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ ল্যান্ডমার্ক ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি অবহেলিত ও জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। বর্তমানে এটির কাছে প্রবেশাধিকার নেই কারণ, এটি চারদিকে রেলিং দ্বারা বেষ্টিত। আশেপাশে গাড়ি পার্কিং ও শুকনোর জন্যে মেলে দেওয়া শাড়ির পিছনে এটি লুকিয়ে থাকে। সাদা মার্বেল ফলকের শিলালিপিটিও ম্লান হয়ে গেছে ও পুরোটাতেই কাঠামোগত ক্ষতির প্রমাণ দেখা যায়। একসময় পানীয় জলের জন্য এটি ছিল, এখন সিংহের মাথাটি ভাঙা ও সম্পূর্ণটি শুকনো হয়ে পড়ে আছে। যদিও ঘোড়ার জন্য জলের কুন্ডটি আর নেই, তবে ঝর্ণাটি এখনও দাঁড়িয়ে আছে। এটি কলকাতার সমৃদ্ধ ঔপনিবেশিক ঐতিহ্য ও পানীয় জল সরবরাহের মতো জনসাধারণের সুবিধার সঙ্গে সংযোগপূর্ণ একটি স্মারক।

ম্যাকডোনেল ফোয়ারার ৩৬০ ডিগ্রি

তথ্যসূত্র

  1. Chandra, S. (2015). PANIOTY FOUNTAIN … British Acclaim for Greek Legacy. Retrieved from panioty-fountain-british-acclaim-for.html
  2. Datta, R. (2014). McDonell Monument, Calcutta (Kolkata). Retrieved from mcdonnell-monument-forgotten-drinking-fountain/
  3. GetBengal. (2021). Panioty, Kolkata’s marble drinking water fountain by the Greeks! Retrieved from panioty-kolkatas-marble-drinking-water-fountain-by-the-greeks
  4. Ghosh, D. (2014). The McDonnell Drinking Fountain: A Forgotten Monument of Calcutta. Retrieved from the-mcdonnell-drinking-fountain.html
  5. Gupta, D. (2021). The Greco-Roman lion taps are still found on the streets of Kolkata. Retrieved from https://www.getbengal.com/details/the-greco-roman-lion-taps-are-still-found-on-the-streets-of-kolkata
  6. Ray, S. (Director). (1958). Parash Pathar [Motion Picture]. Retrieved from Video
  7. Sengupta, S. (2021). McDonnell Fountain at Dalhousie Square: A gem gathering dust. MyKolkata. Kolkata. Retrieved from Article
  8. Tathagata Neogy, Immersive Trails.